মোস্তফা প্রামানিক
নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ
নাটোরের লালপুর উপজেলায় পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টার (বেসরকারি হাসপাতালে) নার্স ও আয়া দিয়ে ডেলিভারী করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডাক্তার না থাকায় অনভিজ্ঞ ওই নার্স, আয়াদের কারণে নবজাতক গলা, মাথা ও বুকে গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয় বলেও অভিযোগে জানা যায়। শিশুটির অবস্থা শঙ্কটাপন্ন হওয়ায় তাকে তড়িঘড়ি করে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরদিন সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নবজাতকটি মারা যায়।
ওই ঘটনায় ওই বেসরকারী হাসপাতালের তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন শিশুহারা মা।
ভুক্তভোগী ওই শিশুর মায়ের নাম জাহানারা খাতুন (৩১)। তিনি দক্ষিণ লালপুর এলাকার ফয়সাল খানের স্ত্রী। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগে জানা যায়, গত ১৯ জুন বিকেল ৪টার দিকে জাহানারা খাতুনকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় লালপুর পৌর এলাকার পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। আগে থেকেই তিনি ডা. ফারজানা ইসলাম বিভার অধীনে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার নরমাল ডেলিভারির পক্ষে মত দেন স্বজনরা। রাত পৌনে ৯টার দিকে প্রসব ব্যথা বাড়লে উপস্থিত নার্স ও আয়া মিলেই ডেলিভারি করান। কিন্ত কোনো চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না।
শিশুর মা ও স্বজনদের দাবি, ডেলিভারির পরপরই নবজাতকের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়ে শিশুটিকে রাজশাহীর একটি হাসপাতালে পাঠায়। পরের দিন শিশুটি মারা যায়।
স্বজনদের অভিযোগ, নার্স ও আয়া দিয়ে ডেলিভারির সময় নবজাতকের গলা, মাথা ও বুকে গুরুতর জখম হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাই শিশুটির মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে তারা দাবি করেন।
ওই ঘটনায় রবিবার রাত ১১টার দিকে নবজাতকের মা লালপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে ওই ক্লিনিকের পরিচালক সুলতানুজ্জামান টিপু জানান, শিশুটির জন্মের পর অনেক চেষ্টা করেও কাঁদানো যায়নি। তাছাড়া ওজন ও ছিল কম। এমন অবস্থায় শিশুটিকে রামেকে পাঠানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শিশুর স্বজনরা নরমাল ডেলিভারি করাতে চাওয়ায় ডাক্তার বাসায় গিয়েছিলেন। তবে শিশুর শরীরে আঘাত বা জখমের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুজ্জামান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাটোর সিভিল সার্জন মুক্তাদীর আরেফিন জানান, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।